সমস্ত লেখাগুলি

ভগৎ সিং ও তাঁর চিন্তাভাবনা -
মঞ্জশ্রী সামন্ত
May 19, 2025 | জীবনী | views:3 | likes:0 | share: 0 | comments:0

‘কীর্তি’ পত্রিকার ১৯২৮- এর সংখ্যায়, ভগৎ সিং দু’টি নিবন্ধ লিখেছিলেন। একটি নিবন্ধের শিরোনাম হল, ‘অচ্ছুৎ কা সাওয়াল’, যা অস্পৃশ্যতাকে কেন্দ্র করে লেখা। আর অন্য নিবন্ধের শিরোনাম হল, ‘সাম্প্রদায়িক দাঙ্গে অর উনকা ইলাজ’, যা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা এবং তার সমাধান নিয়ে লেখা। ভগৎ সিং ১৯২৮’এ যা লিখেছিলেন, বর্তমান সময়েও তা প্রাসঙ্গিক। যা প্রমাণ করে এসব প্রশ্নের সমাধানের জন্য খুব অল্পই কাজ হয়েছে। লেখাটি লিখতে গিয়ে প্রথমেই ভগৎ সিং লিখেছেন, “আমাদের দেশটি অনন্য, যেখানে ছয় কোটি নাগরিককে অস্পৃশ্য বলা হয়। তাঁদের সামান্য স্পর্শ, উচ্চ বর্ণের মানুষকে অপবিত্র করে দেয়। তাঁরা মন্দিরে প্রবেশ করলে দেবতারা ক্ষুব্ধ হন। বিংশ শতাব্দীতে এসবের চর্চা লজ্জাজনক। আমাদের দেশ নিজেদেরকে আধ্যাত্মিক বলে দাবী করে। কিন্তু সমস্ত মানুষের সমান অধিকার মেনে নিতে দ্বিধাবোধ করে। বস্তুবাদী ইউরোপ কয়েক শতাব্দী ধরে বিপ্লবের কথা বলছে। আমেরিকা এবং ফরাসি বিপ্লবের সময়, তাঁরা সমান অধিকারের কথা ঘোষণা করেছে। অথচ, আমরা এখনও বিতর্ক করছি যে অস্পৃশ্যরা পৈতের অধিকারী কিনা, বা তাঁরা বেদ পড়তে পারবে কিনা। বিদেশে আমরা ভারতীয়দের প্রতি বৈষম্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বলছি যে, ইংরেজরা ভারতে আমাদের সমান অধিকার দেয় না।” ভগৎ সিং আমাদের পরিস্থিতি দেখে 

ভাবলেন, এই ধরনের বিষয়ে আসলেই কি অভিযোগ করার কোনও অধিকার আছে? তিনি এই অস্থিরতার সম্ভাব্য সমাধান নিয়ে সত্যিই নিযুক্ত ছিলেন। আমাদের সবার প্রথম সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত: “বিশ্বাস করতে শুরু করা উচিত যে, আমাদের সবার জন্ম এবং পেশা সমান অধিকার নিয়ে। সেখানে বিভক্তিকরণের কোনও প্রয়োজন নেই। যদি কেউ একজন ঝাড়ুদারের পরিবারে জন্মগ্রহণ করে, তার মানে এই নয় যে সারা জীবন তাঁকে আবর্জনা পরিস্কার করে পারিবারিক পেশা বজায় রাখতে হবে, কোনও উন্নয়নমূলক কাজে তাঁর অংশগ্রহণের অধিকার নেই।” 

এই ধরনের বৈষম্য সরাসরি দায়ী ছিল ধর্মান্তরের জন্য। যা ১৯২০’র দশকেও একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা ছিল। তিনি নিজে ঔপনিবেশিকতার বিরোধী হয়েও, শুধু মিশনারিদের নিন্দা করেননি, বা যাঁরা নতুন ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন তাঁদের হত্যা ও পুড়িয়ে ফেলার জন্য হিন্দুদের প্ররোচিত করেননি। তিনি স্ব-সমালোচনামূলকভাবে লিখেছেন: “আপনি যদি তাঁদের সাথে পশুর চেয়েও খারাপ আচরণ করেন, তাহলে অবশ্যই তাঁরা অন্যান্য ধর্মে যোগদান করবেন। যে ধর্মে তাঁরা অনেক বেশি অধিকার পাবে এবং যেখানে তাঁদের সাথে মানুষের মতো আচরণ করা হবে। এই পরিস্থিতিতে খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্ম হিন্দু ধর্মের ক্ষতি করেছে বলে অভিযোগ আনলে তা বৃথা হবে।”

আমাদের কথা


এই দুর্নিবার সময়েও লেখনী চালিয়ে যাওয়ার মত ধীশক্তি ধরে রেখে মুক্তচিন্তকরা নিরন্তর লিখে চলেছেন। তাঁদের লেখাগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়ে চলেছে চেতনার অন্বেষণে পত্রিকা। যা দুই বাংলার পাঠকদের কাছে দ্রুত সমাদৃত হয়। এই পথ চলার একটি ধাপে এসে অন্বেষণ পাবলিশার্স পথ চলা শুরু করেছে মূলত মুক্তচিন্তা ও বিজ্ঞানমনস্ক বইগুলিকে পাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে। আমাদের কথা বলতে লেখক, পাঠক সবাই মিলিয়েই আমরা।

ওয়েবসাইট প্রসঙ্গে


এটি মূলত বিজ্ঞানমনস্কতা, যুক্তিবাদ চর্চা এবং বইপত্রের প্ল্যাটফর্ম। এই ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যুক্তিবাদীদের লেখার চর্চাকে অনুপ্ররণা যোগাবে। লগইন করে আপনিও লিখতে পারবেন, ওয়েবসাইটটি সমস্ত বিজ্ঞানমনস্ক, যুক্তিবাদীদের উদ্দেশ্যে নির্মিত।

যোগাযোগ


Email: yuktibadira@gmail.com

WhatsApp: +91-9433794-113


Website visit count:
86933